ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলায় বন্যার পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিশেষ করে ছনধরা ইউনিয়নে ১৫টি গ্রামে অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। নিম্নলিখিত বিষয়গুলো উল্লেখযোগ্য:
বন্যার প্রভাব
পানিবন্দি মানুষ: ছনধরা ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি রয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত জমি: ফুলপুর ও তারাকান্দা উপজেলায় ৪,২৬০ হেক্টর জমির আমন ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে, যা কৃষকদের জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উদ্ধার কার্যক্রম
স্থানীয় প্রশাসন: পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধারে স্থানীয় প্রশাসন কাজ করছে।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন: বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও উদ্ধার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছে, যাতে করে বিপদগ্রস্ত মানুষের সহায়তা করা যায়।
পরিস্থিতির অবনতি 22 22
নতুন এলাকা প্লাবিত: বৃষ্টির কারণে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট: পানিবন্দি মানুষের মধ্যে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে, যা তাদের জীবনযাত্রাকে বিপর্যস্ত করছে।
স্থানীয় প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এবারের বন্যা তাদের জীবনে দেখা সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি। অনেকেই আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে অবস্থান করছেন এবং খাবারের জন্য হাহাকার করছেন।
এভাবে, ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলায় বন্যার পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর এবং স্থানীয় প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
শেরপুরের নালিতাবাড়ী এলাকা থেকে মালিঝি নদী হয়ে ফুলপুরে পানি প্রবেশের ঘটনা সম্প্রতি ঘটে। এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে গত বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টির কারণে, যা শনিবার (৫ অক্টোবর) রাতভর অব্যাহত ছিল। এর ফলে স্থানীয় বিভিন্ন ইউনিয়নের নিচু এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হতে শুরু করে এবং মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে।
বন্যার প্রভাব
পানিবন্দি মানুষ:
ফুলপুর উপজেলার ছনধরা ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামে অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। উদ্ধার কার্যক্রম চলছে স্থানীয় প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে।
ক্ষতিগ্রস্ত ফসল:
বন্যার কারণে ফুলপুর ও তারাকান্দা উপজেলায় ৪ হাজার ২৬০ হেক্টর আমন ধানের খেত নিমজ্জিত হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমির অবস্থা বেশি খারাপ ।
উদ্ধার কার্যক্রম:
স্থানীয় নৌকা ও স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। ইতিমধ্যে কয়েকশ মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে ।
স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগ
ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ বি এম আরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, উদ্ধার কার্যক্রম সকাল থেকে চলছে এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে ।
তারাকান্দা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জলাবদ্ধতায় ৬০০ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে, তবে দু-তিন দিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে কৃষকের তেমন ক্ষতি হবে না ।
মৃত্যুর ঘটনা
বন্যার কারণে শেরপুরে মোট ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতীতে দুই ভাইসহ ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে ।
সার্বিক পরিস্থিতি
শেরপুরের বিভিন্ন নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন দেড় লাখেরও বেশি মানুষ ।
এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্থানীয় প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, তবে অনেক দুর্গত মানুষ অভিযোগ করেছেন যে তারা পর্যাপ্ত সাহায্য পাচ্ছেন না ।
রোববার (৬ অক্টোবর) ফুলপুরে পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারে কাজ করছে র্যাপিড রেসপন্স বিডি নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তারা নৌকা নিয়ে বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে বয়স্ক, শিশু ও নারীদের উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যান বলে জানান সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক তাসফিক হক নাফিও। তিনি বলেন, আজ দুপুর ২টা পর্যন্ত ২৬৭ জনকে উদ্ধার করেছে ১৯ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে গঠিত টিম। আমাদের উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
তারাকান্দা উপজেলা কৃষি অফিসার অরুনিমা কাঞ্চি সুপ্রভা শাওন বলেন, জলাবদ্ধতায় ৬০০ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে ৫৬০ হেক্টর ধান ও ৪০ হেক্টর শীতকালীন আগাম সবজি। দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে কৃষকের তেমন ক্ষতি হবে না।
তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজনীন সুলতানা বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত মোটামুটি ভালো রয়েছি। বৃষ্টি বাড়লে এখানেও পরিস্থিতি খারাপের আশঙ্কা রয়েছে।
0 Comments