ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক শাখা-২ থেকে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এ প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেছেন সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।
নিষিদ্ধের কারণ
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বিভিন্ন সময়ে হত্যা, নির্যাতন, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ এবং জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। বিশেষ করে গত ১৫ বছরে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ জনগণের ওপর সশস্ত্র আক্রমণ চালিয়েছে, যার ফলে শতশত নিরপরাধ মানুষ নিহত হয়েছে এবং অনেকের জীবন বিপন্ন হয়েছে
আইনগত ভিত্তি
সরকার ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯’-এর ধারা ১৮-এর উপধারা (১) এর আওতায় ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এই আইনের আওতায় সরকার কোনো ব্যক্তি বা সত্তাকে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে নিষিদ্ধ করতে পারে
ছাত্রলীগের প্রতিক্রিয়া 22
22
ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এই আদেশকে অবৈধ এবং অসাংবিধানিক বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, "এই সরকারের আদেশ মানার প্রশ্নই ওঠে না।" তিনি আরও দাবি করেন যে, ছাত্রলীগ শুরু থেকেই কোটা সংস্কারের পক্ষে ছিল এবং বর্তমান সরকার ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে
এতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করে বিগত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হত্যা, নির্যাতন, গণরুম-কেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নসহ নানাবিধ জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল এবং এতৎসম্পর্কিত প্রামাণ্য তথ্য দেশের সব প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এবং কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের অপরাধ আদালতেও প্রমাণিত হয়েছে। 22
22
যেহেতু ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ জনগণকে উন্মত্ত ও বেপরোয়া সশস্ত্র আক্রমণ করে শত শত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিকে হত্যা করেছে এবং আরও অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে এবং যেহেতু সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে যে, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক ও উসকানিমূলক কর্মকান্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যের সহিত জড়িত রহিয়াছে-সেহেতু সরকার ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯’-এর ধারা ১৮-এর উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল এবং উক্ত আইনের তফসিল-২ এ ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ নামীয় ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করল।’ এটা অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
0 Comments